বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৩/০৭/২০২৫ ৮:৫০ পিএম

কক্সবাজারের টেকনাফের দ্বীপ ইউনিয়ন সেন্ট মার্টিনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে কেবল একটি। জিনজিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি শিক্ষক-সংকটে ধুঁকছে এক যুগের বেশি সময় ধরে। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

বিদ্যালয়টিতে শিক্ষকের পদ রয়েছে ছয়টি। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ চারটি পদ প্রায় ১৪ বছর ধরে শূন্য পড়ে রয়েছে। বর্তমানে মোহাম্মদ তাহের ও মুহাম্মদ নুরুল হুদা নামের দুজন শিক্ষক কর্মরত। প্রধান শিক্ষক না থাকায় মোহাম্মদ তাহের সেই দায়িত্ব পালন করেন। তাঁকে বিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কাজে বেশির ভাগ সময় ব্যস্ত থাকতে হয়। শিক্ষক নুরুল হুদাকে দিয়েই মূলত চলে পাঠদান।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক-সংকটের কারণে পাঠদান ব্যাহত হওয়ায় বিদ্যালয়টিতে দিন দিন কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। পাঁচ-ছয় বছর আগেও বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ছিল পাঁচ শতাধিক। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২১৮ জন। এর মধ্যে প্রাক্‌-প্রাথমিকে ১৮ জন, প্রথম শ্রেণিতে ১৫, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১২, তৃতীয় শ্রেণিতে ২৮, চতুর্থ শ্রেণিতে ৮০ ও ৫ম শ্রেণিতে ৬৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।

পাঁচ-ছয় বছর আগেও বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ছিল পাঁচ শতাধিক। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২১৮ জন। এর মধ্যে প্রাক্‌-প্রাথমিকে ১৮ জন, প্রথম শ্রেণিতে ১৫, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১২, তৃতীয় শ্রেণিতে ২৮, চতুর্থ শ্রেণিতে ৮০ ও ৫ম শ্রেণিতে ৬৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, ১৯৪৮ সালে ৩৭ শতাংশ জমির ওপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এটি ছাড়া সেন্ট মার্টিনে আর কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। তবে কয়েকটি নুরানি মাদ্রাসা রয়েছে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘দুজন শিক্ষক দিয়ে এত শিক্ষার্থীকে পড়ানো সম্ভব নয়। বিদ্যালয়ের কোনো কাজে আমি বাইরে থাকলে একজন শিক্ষকই ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ান’।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছৈয়দ আলম বলেন, শিক্ষক-সংকটের কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে ঠিকমতো পাঠদান সম্ভব হয় না। এতে অভিভাবকেরাও বিদ্যালয়টিতে শিশুদের পাঠাতে চান না। ফলে অনেক শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে শিশুরা। সম্প্রতি তোলা
বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে শিশুরা। সম্প্রতি তোলাছবি: প্রথম আলো
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন, দ্বীপে যেসব বাসিন্দার সামর্থ্য রয়েছে, তাঁরা কক্সবাজার বা টেকনাফ সদরে রেখে সন্তানদের পড়ান। কিন্তু দরিদ্র বাসিন্দাদের পক্ষে সেটি সম্ভব হয় না। দ্বীপের একমাত্র সরকারি বিদ্যালয়টির শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ দিলে এই সংকট কাটানো যাবে।

দ্বীপে যেসব বাসিন্দার সামর্থ্য রয়েছে, তাঁরা কক্সবাজার বা টেকনাফ সদরে রেখে সন্তানদের পড়ান। কিন্তু দরিদ্র বাসিন্দাদের পক্ষে সেটি সম্ভব হয় না। দ্বীপের একমাত্র সরকারি বিদ্যালয়টির শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ দিলে এই সংকট কাটানো যাবে।
ফয়েজুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ
জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আবু নোমান মোহাম্মদ আবদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হলেও কিছুদিন পর বদলি হয়ে যান, তাই সংকট কাটছে না। শিক্ষক পদায়নের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার চিঠি পাঠানো হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান আরজু বলেন, সেন্ট মার্টিনে যেতে সাগরপথ পাড়ি দিতে হয়। তাই নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা সেন্ট মার্টিনে যেতে চান না। এরপরও বিদ্যালয়ের শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

পাঠকের মতামত

এইচএসসির স্থগিত ২২ ও ২৪ জুলাইয়ের পরীক্ষা একই দিনে: শিক্ষা উপদেষ্টা

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্থগিত হওয়া এইচএসসি ও সমমানের দুটি ...

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: গুরুতর আহত কক্সবাজারের আলবীরা

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন কক্সবাজারের ...

মঙ্গলবারের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত, তথ্য উপদেষ্টার মধ্যরাতের ঘোষণা

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি (উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট) পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। মধ্যরাতে এ ...

একরাম হত্যা মামলায় বদিকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি একরামুল হককে হত্যার অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক সংসদ ...